০৭:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি-ভারত সম্পর্কের নতুন মোড়: আস্থার সন্ধান

নাগরিক বার্তা ডেস্ক

গত দেড় দশক ধরে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দেখেছে ভারত। তবে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর দিল্লি এখনও সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এবার বাস্তবতা মেনে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে চায় ভারত। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে—এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে দলটির প্রতি আস্থা তৈরি করার উদ্যোগ নিচ্ছে দিল্লি। বিএনপির সহযোগিতায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চায় তারা।

গত জানুয়ারিতে ভারতের আর্মি ডে উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর বক্তব্যও এ ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলেন, “ঢাকা-দিল্লির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে।” কূটনৈতিক সূত্রও এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, “ভারত বাংলাদেশে দ্রুত একটি নির্বাচন দেখতে চায়, কারণ নির্বাচন হলে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বেশি।”

ভারত মনে করছে, বিএনপি ইতোমধ্যেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, যা তাদের জন্য স্বস্তির কারণ।

এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, পূর্বে বৈরি সম্পর্ক থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত ও বিএনপি পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল। ভারত অন্তর্বর্তী সময়ে বিএনপির সঙ্গেই সম্পর্ক মজবুত করতে চায়।

বিএনপি নেতারাও মনে করেন, সরকারের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও জামায়াতের মতো শক্তিগুলোকে মোকাবিলা করতে প্রতিবেশী দেশের সমর্থন বিশেষ করে ভারতের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গত সেপ্টেম্বরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। পরে মির্জা ফখরুল জানান, ভারত রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সঙ্গেও সম্পর্ক দৃঢ় করতে আগ্রহী।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে ভারত সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আঞ্চলিক রাজনীতির সেই চিত্র পাল্টে দিয়েছে।

এখন বিএনপি ও ভারত উভয়ই বুঝতে পেরেছে, পারস্পরিক ভরসাই তাদের জন্য স্থিতিশীল ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপডেট সময় : ০২:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৭৭ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি-ভারত সম্পর্কের নতুন মোড়: আস্থার সন্ধান

আপডেট সময় : ০২:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গত দেড় দশক ধরে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দেখেছে ভারত। তবে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর দিল্লি এখনও সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এবার বাস্তবতা মেনে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে চায় ভারত। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে—এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে দলটির প্রতি আস্থা তৈরি করার উদ্যোগ নিচ্ছে দিল্লি। বিএনপির সহযোগিতায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চায় তারা।

গত জানুয়ারিতে ভারতের আর্মি ডে উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর বক্তব্যও এ ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলেন, “ঢাকা-দিল্লির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে।” কূটনৈতিক সূত্রও এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, “ভারত বাংলাদেশে দ্রুত একটি নির্বাচন দেখতে চায়, কারণ নির্বাচন হলে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বেশি।”

ভারত মনে করছে, বিএনপি ইতোমধ্যেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, যা তাদের জন্য স্বস্তির কারণ।

এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, পূর্বে বৈরি সম্পর্ক থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত ও বিএনপি পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল। ভারত অন্তর্বর্তী সময়ে বিএনপির সঙ্গেই সম্পর্ক মজবুত করতে চায়।

বিএনপি নেতারাও মনে করেন, সরকারের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও জামায়াতের মতো শক্তিগুলোকে মোকাবিলা করতে প্রতিবেশী দেশের সমর্থন বিশেষ করে ভারতের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গত সেপ্টেম্বরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। পরে মির্জা ফখরুল জানান, ভারত রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সঙ্গেও সম্পর্ক দৃঢ় করতে আগ্রহী।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে ভারত সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আঞ্চলিক রাজনীতির সেই চিত্র পাল্টে দিয়েছে।

এখন বিএনপি ও ভারত উভয়ই বুঝতে পেরেছে, পারস্পরিক ভরসাই তাদের জন্য স্থিতিশীল ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।